ডাক্তার এর কাছে যেতে না চাইলে এই কাজগুলোকে আপন করুন

ডাক্তার এর কাছে যেতে না চাইলে


ডাক্তার এর কাছে না গিয়েও সুস্থ থাকা যায়। প্রাকৃতিকভাবে এমন কিছু কাজ আছে যা করলে ডাক্তার এর কাছে যাওয়ার প্রয়োজন হয় না। কী সেই কাজগুলো, ডাক্তাররাই যেগুলো করতে বলে সেগুলো জেনে সেগুলোকে আপন করে নিলে ডাক্তার থেকে দূরে থাকা যাবে। 



ডাক্তার এর কাছে যাওয়া 

খেয়াল করলে দেখা যায় যে শহর এলাকার মানুষের চাইতে গ্রাম এলাকার মানুষেরা কম অসুস্থ হয়। এর কারণ কী? কারণ হলো গ্রামের মানুষের শরীরের ইমিউন বা রোগ প্রতিরোধকারী ক্ষমতা ভালো। 

গ্রামের মানুষের মধ্যে এই ক্ষমতা ভালো হওয়ার কারণও আছে। গ্রামের মানুষেরা প্রতিদিন পরিশ্রম করে। ঘুমের মুহুর্ত ছাড়া তারা শুয়ে-বসে থাকে না খুব একটা। প্রতিদিনের পরিশ্রম ও ভেজালমুক্ত, রাসায়নিক মুক্ত খাবারই তাদেরকে এই ক্ষমতা জুগিয়ে থাকে।

আর শহরের মানুষের কায়িক বা শারীরিক ভাবে পরিশ্রম করা তেমন হয় না। পায়ে হেঁটে না গিয়ে শহরের প্রায় সব মানুষই যানবাহন ব্যবহার করে। অলস থাকা, বাইরের ভেজালযুক্ত ও রাসায়নিকযুক্ত খাবার খাওয়ার কারণে শহরের লোকজনের শারীরিক প্রতিরক্ষার সিস্টেম কিছুটা দূর্বল।

এসব কারণেই গ্রামের মানুষের চাইতে শহরের মানুষকে ডাক্তার এর কাছে যেতে হয় বেশি।



ডাক্তার এর কাছে যেতে না চাইলে

সুস্থ স্বাভাবিক জীবন কে না চায়। সবাই-ই সুস্থ সুস্বাস্থ্য ও রোগমুক্ত জীবন আশা করে। নিজেদের করা কিছু ভুল কাজ ও ভুল অভ্যাসের কারণে সবসময় সুস্থ থাকাটা সবার বেলায়ই হয়ে ওঠে না।

সুস্বাস্থ্যের জন্য ও রোগমুক্ত থাকতে চাইলে কিছু জিনিসকে, কাজকে আপন করে নিতে হবে। সেই জিনিস আর কাজগুলোকে আপন করতে পারলে ডাক্তার এর কাছে যাওয়ার প্রয়োজন হবে না।

সেগুলো নিম্নরুপ :

সকালের সূর্যের আলো

সকালটা শুরু করতে হবে সূর্যের কোমল আর উপকারী আলো মেখে। কিন্তু আধুনিক এই প্রজন্মের কাছে দেরিতে ঘুমিয়ে দুপুরে বা বিকেলে ঘুম থেকে ওঠা একটি বদঅভ্যাসে পরিণত হয়ে গিয়েছে। এটি মোটেই স্বাস্থ্যের জন্য ভালো কাজ নয়।

সকালের সূর্যের নরম, কোমল তাপে শরীরের জন্য কিছু প্রয়োজনীয় বিষয় থাকে যা কারও শরীরকে রোগ প্রতিরোধকারী ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। ভিটামিন-ডি থাকে সূর্যের ঐ সময়ের তাপে। তাই সকালে ঘুম থেকে ওঠা ও সূর্যের কোমল আলোয় কিছুক্ষণ নিজেকে বাইরে রাখা সবার ক্ষেত্রেই দরকারী।


শরীরচর্চায় কিছুক্ষণ ঘাম ঝরানো

সকালে উঠে শরীরচর্চা করা খুবই ভালো একটি স্বাস্থ্য উপযোগী দিক। শহরের ইট পাথরের দালান-কোঠার মাঝে ফাঁকা জায়গা পাওয়া মুশকিল। খেলার মাঠ পাওয়া তো আরও মুশকিলের। 

গ্রামে অনেক খোলামেলা জায়গা থাকায় সেখানকার মানুষজন যেকোনো শারীরিক শ্রম, খেলাধুলার সুযোগ আর সময় পেয়ে থাকে বেশি। শহরে তা থাকায় শরীরকে ফিট রাখা তাই যেন কঠিন হয়ে যায়। বাইরে না গিয়েও যে শরীরচর্চা করা যায় তা নিশ্চয় জানেন। 

ঘরেই হালকাপাতলা ব্যায়াম করুন প্রতিদিন। এই হালকাপাতলা ব্যায়ামগুলোই সুস্থ থাকার এক নিয়ামক হয়ে যাবে। লিংকটি থেকে সেরকম ব্যায়াম জেনে নিতে পারবেন।

শরীরচর্চা করলে সুস্থ  থাকা যায় ও তা শরীরে বুস্টার এর মতো কাজ করে। ফলে রোগ প্রতিরোধকারী ক্ষমতা বাড়ানো, হরমোন নিঃসৃত হওয়া, শক্তি লাভ করা যায়। 

বড় বড় ও মারাত্মক কিছু রোগ যেমন- হার্ট অ্যাটাক থেকে, উচ্চ রক্তচাপ থেকে, ডায়াবেটিসের থেকে দূরে থাকতে ও এগুলোকে প্রতিরোধ করতে হালকা ব্যায়ামও অনেক বড় ভূমিকা পালন করে। 


সারাদিন ইতিবাচক মনোভাব বজায় রাখা

সকালের একটি পজিটিভ চিন্তাভাবনা সারাদিনে মানসিকভাবে ভালো থাকতে প্রেরণা দিয়ে থাকে। আর মানসিকভাবে সুস্থ থাকলে শরীরে বড় বড় রোগও প্রতিরোধ করা যায়। 

মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বীকার করা ও আবেগ নিয়ন্ত্রণ রাখা ইতিবাচক মনোভাবের বৈশিষ্ট্য। উদ্বেগ, ডিপ্রেশন থেকে বের হয়ে আসার চেষ্টা করতে হবে।


ব্রেইনের স্মৃতিশক্তি বাড়াতে

ব্রেইনকে যত বেশি ব্যবহার করা যায়, ব্রেইন তত উন্নত হয়ে ওঠে। মনোযোগ ধরে রাখা কঠিন একটি কাজ। ব্রেইনকে শার্প করতে, স্মৃতিশক্তি বাড়াতে, ও মনোযোগী হতে যোগব্যায়াম করা যায়। আবার কিছু ইনডোর বা ঘরে বসে খেলা যায় এমন খেলার মাধ্যমেও স্মৃতিশক্তি ও মনোযোগ বাড়ানো যায়।

দাবা খেলা খুব কার্যকরী একটি মাধ্যম যা স্মৃতিশক্তি ও মনোযোগ বাড়াতে পারে। ব্রেইন যদি ভালো থাকে, মন যদি ভালো থাকে, তাহলে নিশ্চয় ডাক্তার লাগবে না সুস্থ থাকতে হলে।


পরিমিত ও নিয়মিত খাবার

ফাস্টিং অনেক উপকারী একটি পদ্ধতি। এখানে গিয়ে না খেয়ে থাকার এবং ফাস্টিং এর বিস্তারিত জানতে পারা যাবে। 

পরিমিতভাবে খেতে হবে। অতিরিক্ত ভোজন করা উচিত না।

নিয়মিত খেতে হবে। ফলমূল, শাক ও সবজি নিঃসন্দেহেই সুস্থ থাকার সরঞ্জাম জোগায়। এগুলো বেশি করে খেতে পারলে রোগমুক্ত থাকা যাবে। অতিরিক্ত চিনি, মিষ্টি, লবণ খাওয়া থেকে যত বিরত থাকা যায়, ততই মঙ্গল। 


ঘুমানো 

নিশ্চিন্তে ৭ থেকে ৮ ঘণ্টার ঘুম সবার জন্যই হওয়া প্রয়োজন। ঘুম শরীরে রিস্টোর ও বুস্টার এর মতো কাজ করে। শরীরে নতুন করে পুরো উদ্যমে কার্যক্ষমতা জোগানো ও অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন রাসায়নিক ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া সুষ্ঠু স্বাভাবিকভাবে হওয়ার জন্য ঘুমের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য।



কোন কাজটি কতবার করে করতে হবে 


১. সকালের মৃদু আলোয় ২০-৩০ মিনিট কাটানো।

২. সর্বনিম্ন ২৫ মিনিট হাঁটা / শরীরচর্চা করা। 

৩. পছন্দের কোনো কাজের জন্য দিনের এক সময়কে নির্দিষ্ট করে রাখা।

৪. যোগব্যায়ামে ৪ বার ৪ মিনিট করে গভীরভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়া।

৫. তিন বেলায় ৩ কাপ গ্রীন-টি পান করা, ৪-৫ বার ফলমূল ও শাক সবজি খাওয়া।

৬. কম করেও ৮ গ্লাস পানি পান করা। 

৭. টানা ৭ থেকে ৮ ঘণ্টার নিশ্চিন্তে ঘুম হওয়া।

এই কাজগুলো খেয়াল করলে দেখবেন বেশিরভাগ ডাক্তাররাই রোগীদেরকে বলে দেয়।

উক্ত কাজগুলো প্রতিদিন করে যেতে পারলে সুস্থ থাকা নিয়ে চিন্তা করতে হবে না। ডাক্তার এর কাছে যেতে না চাইলে এগুলোকে নিয়মিত চালিয়ে যেতে হবে।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url