কীভাবে টাইফয়েড প্রতিকার করবেন? টাইফয়েড এর কারণ ,লক্ষণ

কীভাবে টাইফয়েড প্রতিকার করবেন?


টাইফয়েড জ্বর হল একটি ব্যাকটেরিয়া সংক্রামক রোগ। যা সালমোনেলা টাইফি (sanmonella typhi) নামক ব্যাকটেরিয়ার কারনে  সংঘটিত হয়। এই ব্যাকটেরিয়া আক্রান্ত ব্যক্তির অন্ত্রের মধ্যে বসবাস করে। যা খাবার ও পানিকে দূষিত করে।



টাইফয়েড এর কারণ 

টাইফয়েড জ্বর সাধারণত সালমোনেলা টাইফি নামক ব্যাকটেরিয়ার দ্বারা দূষিত খাবার বা পানির মাধ্যমে ছড়ায় । এটা তখন ঘটে যখন টাইফয়েডে আক্রান্ত কোনো ব্যক্তির হাত না ধোয়া খাবার স্পর্শ করলে বা খেলে । অথবা ময়লা পানি  (যে পানিতে মল বা প্রস্রাব আছে) পান করলেও আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

এই ব্যাকটেরিয়া তখনও ছড়ায় যখন কেউ যদি টয়লেট বা শৌচাগার ব্যবহারের পরে হাত না ধুয়ে জিনিসপত্র, দরজা, তৈজসপত্র, সামগ্রী স্পর্শ করে।

সেই স্পর্শ করা বস্তুগুলো অন্য কেউ বা অন্যরা স্পর্শ করলে ব্যাকটেরিয়া পরস্পর ব্যক্তিদের মধ্যে স্থানান্তরিত হয়ে যায় ফলে টাইফয়েড হওয়ার সম্ভাবনা ও বেড়ে যায় । তাছাড়াও টয়লেট ব্যবহারের পরে হাত না ধুয়ে খাবার খেলেও এই ব্যকটেরিয়া খুব সহজে অন্ত্রে প্রবেশ করে।

পরিবেশ পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে এই রোগে শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। শরীরে জীবাণু প্রবেশ করলেই টাইফয়েড হয়ে যাবে ব্যাপারটা এমন না। এর কারণ কারো কারো দেহে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বেশ মজবুদ  হয় তাই অনেক সময় শরীরে জীবাণু  সংক্রমণ করতে পারেনা। 



টাইফয়েড এর লক্ষণ

জীবানু প্রবেশের ৬-৩০ দিনের মধ্যে লক্ষণ প্রকাশ পায়। সময় মতো চিকিৎসা না নিলে এর লক্ষণ মৃদু থেকে ধীরে ধীরে তীব্র হতে পারে আর কয়েকদিনের মধ্যেই জ্বরের মাত্রা বাড়তে পারে । তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যক্তি আক্রান্ত না হলেও জীবাণু বহন করে আশে পাশে রোগের বিস্তার ঘটাতে পারে। 

আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে নিম্নে এই লক্ষণ গুলো দিতে দেখা পারে :

১) প্রচন্ড মাথা ব্যথা

২) সর্দি আর ঠান্ডা লাগা।

৩) ক্ষুধামন্দা। 

৪) পেটে ব্যাথা। 

৫)  বুকে ও পেটে দেখা দিতে পারে ছোট ছোট র‍্যাশ (Rash) এবং গোলাপি রঙের স্পট দেখা দিতে পারে যা সারা শরীরেও ছড়িয়ে যেতে পারে।

৬) বমি বমি ভাব অথবা বমি আসা।

৭) কোষ্ঠকাঠিন্য আর ডায়রিয়া।

৮) কাশি।

৯) প্রচন্ড জ্বর। 

১০) শরীরের জায়গায় জায়গায় মাংসপেশীতে ব্যাথা করা । 



কীভাবে টাইফয়েড প্রতিকার করবেন

এ রোগের চিকিৎসা হচ্ছে এন্টিবায়োটিক। এন্টিবায়োটিক এর মাধ্যমে এই রোগ সারানো যায়। কিন্তু তার আগে নিজেকেই নিজের প্রতি সচেতন হতে হবে এবং অন্যদেরকে সচেতনতার হাত বাড়াতে হবে। 

এন্টিবায়োটিক বা টাইফয়েড এর টিকার পর যে কাজটা করতে হবে সেটা হচ্ছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা ।

সুস্থ থাকার ক্ষেত্রে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা থাকার গুরুত্ব অপরিসীম । পরিষ্কার পোশাক-আশাক, বিশুদ্ধ পানি, পরিষ্কার পরিবেশে বসবাস করলে  প্রতিরোধ করা যায়।

স্বাস্থ্য সম্মত টয়লেট ব্যবহার করতে হবে। এবং টয়লেট সব সময় পরিষ্কার রাখতে হবে যেনো কোন ময়লা না জমে। প্রতিবার টয়লেটে যাওয়ার পরে ভালো করে সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে। খাওয়ার আগে ও পরে সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে।  

সবসময় ঘরের জিনিসপত্র পরিষ্কার রাখতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তির জিনিসপত্র স্পর্শ করার পর সাবান দিয়ে ভালো করে হাত ধুতে হবে। আক্রান্ত ব্যাক্তির জিনিসপত্র আলাদা করে রাখতে হবে। 

আক্রান্ত ব্যক্তিকে কিছুদিনের জন্য কোয়ারান্টাইনে রাখতে হবে।

শাক সবজি মাছ মাংস ভালোমতো ধুয়ে রান্না করে খেতে হবে। পানি ভালো ভাবে ফুটিয়ে বা ফিল্টারের মাধ্যমে জীবানুমুক্ত করে পান করতে হবে।

বাহিরের খাবার বেশিরভাগই অস্বাস্থ্যকর হয় তাই বাহিরের খাবার এড়িয়ে চলাই ভালো।

তাহলেই সম্ভব হবে টাইফয়েড প্রতিকার করা।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url