৭ টি উপকারী ইয়োগা পজিশন
ইয়োগা শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য এক কার্যকর উপকারী ব্যায়াম। এতে মন, শরীর সবদিক থেকে রোগ প্রতিরোধে কার্যক্ষম হয়ে উঠতে পারে। মানসিক স্বস্তি লাভের খুবই কার্যকর মাধ্যম হলো ইয়োগা। ইয়োগাকে বাংলায় 'যোগব্যায়াম' ও বলা হয়। যারা শারীরিক অসুস্থতা ও মানসিক অশান্তিতে দিনাতিপাত করে, তাদের জন্য মুড বুস্টার হলো যোগব্যায়াম।
৭ টি উপকারী ইয়োগা পজিশন সম্পর্কে এখানে পাঠকদেরকে অবহিত করবো। যে ৭ টির সাহায্যে আপনার শারীরিক শক্তি, মানসিক বল, ঘুম, ডিপ্রেশন কাটানো এসব কিছুই করতে পারবেন। এবং আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকেও কয়েকটি কার্যকর ইয়োগার আসনের/ পজিশনের কথা বলবো।
ইয়োগা কেন উপকারী?
এতে মনকে ধ্যানের মধ্যে রাখতে হয় বলে মনোযোগ, স্মৃতিশক্তি উন্নত করা যায়। ধ্যানই ইয়োগার অন্যতম মূল বিষয়। ব্যায়ামের সাথে শ্বাস-প্রশ্বাস এর ক্রিয়া ও ধ্যান একসাথে কাজে লাগানো হয় বিধায় এই তিনটিই (ব্যায়াম, শ্বাস-প্রশ্বাস, ধ্যান) ইয়োগার মূল বিষয়।
ইয়োগার ইতিহাস দীর্ঘকালের। যেকোনো কাজে মনোনিবেশ ও মনোবল পেতে হলে শারীরিকভাবে যেমন সুস্থতা প্রয়োজন, মানসিক দিকেরও সুস্থতা তেমনি প্রয়োজন। মনই যদি সুস্থ না থাকে, মনে জোর না থাকে, তাহলে শারীরিক শক্তি প্রয়োগের স্পৃহা জাগবে কোথায় থেকে?
মানসিক জোরে সাথে সাথে যেন শারীরিক জোরও লাভ করা যায়, সে চিন্তা থেকেই ইয়োগার আবির্ভাব। এবং যা সফল।
কারণ, শরীর এবং মনকে জোর দিতে ইয়োগা সত্যিই খুব কার্যকরী। শরীরে শক্তি বাড়াতে, নমনীয় করতে, স্ট্রেস, হতাশা ঝেড়ে ফেলতে, ওজনকে নিয়ন্ত্রণ রাখতে যোগব্যায়ামের সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হয়েছে।
এই শারীরিক ভঙ্গির উপকারিতাকে বিশ্বের মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে একটি নির্দিষ্ট দিবসও পালন করা হয়। ২১- ই জুন 'আন্তর্জাতিক ইয়োগা দিবস' হিসেবে পালিত হয়ে থাকে।
কার্যকারিতা ও ভঙ্গিভেদে আবার আলাদা আলাদা নামও আছে এর। যেমন- হজম অর্থাৎ পরিপাক ক্রিয়া ভালো রাখতে করা হয় 'বজ্র আসন', ঘুম ভালো করার জন্য করা হয় 'গোমুখ আসন', শরীরের কোষ ও ত্বকের ভালোর জন্য করা হয় 'শব আসন', 'প্রাণায়াম' সহ আরও কিছু নাম ও ভঙ্গি। 'শীর্ষ আসন' বা মাথার উপর ভর দিয়ে যে ভঙ্গি করা হয় সেটাকে 'ইয়োগার রাজা' বলা হয়ে থাকে।
কখন ইয়োগা করার সঠিক সময়?
সকালে আবহাওয়া নির্মল থাকে। তাই এই সময়টাকে বেশিরভাগ মানুষ বেছে নেয় ইয়োগার জন্য। আবার অনেকেই সন্ধ্যার সময়ও করে। আবার রাতে ঘুমানোর আগেও করে। সকাল, দুপুর, সন্ধ্যা, রাত যখনই করা হোক না কেন, ফলাফল আর কার্যকারিতা একই পাওয়া যায়।
আপনার সুবিধাজনক যেকোনো সময়কেই বেছে নিতে পারেন।
সবচেয়ে ভালো হয় যদি সপ্তাহের প্রতিদিনই ১০-১৫ মিনিটের জন্য হলেও একটি অথবা দুইটি আসন করার। তবে সপ্তাহে তিনদিন করতে পারেন যদি প্রতিদিন সম্ভব না হয়।
আর যদি অন্য কোনো ব্যায়াম করার পর যোগব্যায়াম করেন, তাহলে অন্য কাজ বা ব্যায়াম করার পর অন্তত দশ মিনিট বিশ্রাম নিন। এ সময় শরীর শান্ত হয়ে আসতে থাকবে, হয়রান কমবে, দম স্বাভাবিক হবে। তারপর যোগব্যায়াম শুরু করুন। শরীর শান্ত ও দম স্বাভাবিক থাকা অবস্থায়ই ইয়োগা করা উত্তম।
৭ টি উপকারী ইয়োগা পজিশন
১. চেয়ারে বসার পজিশন
এটা আমি করে থাকি এবং উপকারও পাচ্ছি। এই আসনের ইয়োগা আপনার পায়ের, পিঠের, ও কাঁধের পেশিকে শক্তিশালী ও নমনীয় করে তুলবে।
দুই পায়ের উপর ভর করে সোজা হয়ে দাঁড়াবেন। দুই হাত সামনের দিকে তুলে সোজা করে রাখবেন। এখন হাঁটুকে কাজে লাগিয়ে এক নাগাড়ে বসা থেকে ওঠা, ওঠা থেকে বসা এভাবে করুন। ১ মিনিট করে করবেন।
২. কোবরার পজিশন
এটাও আমি করে থাকি। এটা করার সময় নিজেই বুঝতে পারবেন কেমন লাগে। এটি বুক, বাহু, পেট, কাঁধ, নিতম্ব - এগুলোর পেশির সাথে কাজ করে।
উপুড় হয়ে দুই পা সোজা করে একদম মাটির সাথে লাগিয়ে রাখবেন কোমর পর্যন্ত। বেশিরভাগ ভর থাকবে দুই হাতের উপর। হাত সোজা থাকবে এবং কনুই বুকের সাথে লাগানো অবস্থায়। মাথা সোজা অথবা কিছুটা উপরের দিকে মুখ করে রাখবেন। চাইলে হাতের উপর বল প্রয়োগ করে বুককে উপরের দিকে ও কাঁধ পেছনের দিয়ে তুলতে পারেন। পজিশনটা বুঝতে প্রথম ইমেজটি দেখুন।
এভাবে ২০ সেকেন্ডের মতো থাকুন। সম্ভব হলে ৩ বার করে করুন এটি।
...