কোমরে ব্যথা হলে কমানোর সঠিক উপায় ও স্ট্রেচিং
কোমরে ব্যথা মানেই কোনো রোগের লক্ষণ না। ওঠাবসা, শোয়া, কাজকর্মের কারণেও হয় কোমরে ব্যথা। ঠিকমতো না শোয়া, চেয়ারে ভুলভাবে বসা, ভারী বোঝা উঠানো এরকম কাজগুলোর কারণে হয়ে থাকে। তাই, কোমর ব্যথা নিয়ে দুশ্চিন্তা না করে সঠিক কারণ খুঁজে বের করতে হবে। ঘরোয়া কিছু পদ্ধতি, কিছু ব্যায়াম যেমন- স্ট্রেচিং করে এ সমস্যা কমানো যায়।
এই আর্টিকেলে কোমরে ব্যথা হলে কমানোর সঠিক উপায় ও স্ট্রেচিং , ব্যথার কারণ, কোন রোগ হলে লক্ষণ হিসেবে কোমরে ব্যথা হয় এসব সম্পর্কে বলা হয়েছে।
কেন কোমরে ব্যথা হয়?
একাধিক কারণ থাকতে পারে ব্যথার। এবং একেকজনের মধ্যে ব্যথা হতে একেক কারণে। সবার ক্ষেত্রে একই কারণে ব্যথা হয় না। নারী ও পুরুষ যে কারও হতে পারে। তবে নারীদের মধ্যে কোমর বা ব্যাক পেইনের হার বেশি দেখা যায়।
কোমর ব্যবহার করে একটানা কাজ করে যাওয়া, বাঁকা হয়ে শোয়া, চেয়ারে ঠিকমতো না বসা, বেশিক্ষণ সময় ঝুঁকা অবস্থায় কাজ করা, ভারী বস্তু উঠানামা করানো, বয়স বেশি হওয়া অর্থাৎ বার্ধক্যে পৌঁছে যাওয়া এসমস্ত সাধারণ কারণে হয়ে থাকে ব্যাক পেইন। এগুলো নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। সাধারণ ঘরোয়া কিছু পদ্ধতি ও হালকা স্ট্রেচিং ব্যায়াম করেই এসব কারণে হওয়া ব্যথা কমানো যায়।
কিন্তু কোমরের হাড়ের ফাটল বা ভেঙে যাওয়া, মাংসপেশি দূর্বল হয়ে যাওয়া, মেরুদণ্ডে আঘাত, কোমরে থাকা বাটি বা ডিস্কের মতো অংশের ভঙ্গুরতার কারণে যদি ব্যথা হয়, তাহলে এগুলোর জন্য চিকিৎসা নিতে হবে।
যেসব রোগের কারণে কোমরে ব্যথা হয়
প্রাত্যহিক কাজকর্মের ভুল ভঙ্গি, কোমরে আঘাত, ফাটল ছাড়াও কিছু রোগের লক্ষণ হিসেবেও কোমর ব্যথা হতে পারে।
আর্থ্রাইটিস, কিডনির সমস্যা, মুত্রথলির সমস্যা, মেরুদণ্ডের কোনো রোগ , মেয়েদের PCOS ও গর্ভবতী থাকাকালীন সময়ে লক্ষণস্বরূপ পিঠের নিচের দিকে ব্যথা হয়।
কোমরে যদি ব্যথা হয়, তাহলে কোনো রোগের জন্য ব্যথা হচ্ছে বলে ধরে নেওয়া যাবে না। রোগের লক্ষণে ব্যথা হলে তা অনেকদিন চলতে থাকে। চিকিৎসকের সাহায্যে পরীক্ষা করে তবেই নিশ্চিত হতে হবে আসলে কোনো রোগের জন্য ব্যথা হচ্ছে কি-না।
কোমরে ব্যথা কতক্ষণ থাকে?
কারণ অনুযায়ী ব্যথার স্থায়ীত্ব আলাদা হয়। সাধারণ কোনো কারণে যদি হয়, তাহলে সেটার স্থায়ীত্ব হয়ে থাকে কয়েক ঘণ্টা থেকে ২/৩ দিন।
আঘাত ও রোগের কারণে হলে সেটা স্থায়ী হতে পারে কয়েক ঘণ্টা থেকে কয়েকদিন, এমনকি দীর্ঘকালীন স্থায়ীও হতে। ৩ দিনের বেশি যদি ব্যথা থাকে, তাহলে সতর্ক হয়ে চিকিৎসক এর কাছে যেতে হবে।
ব্যথা করতে পারে থেমে থেমে অথবা একটানা। একবার ব্যথা সেরে গেলে সঠিক পরিচর্যা না করলে আবার ব্যথা ফিরে আসতে পারে।
কোমরে ব্যথা হলে কমানোর সঠিক উপায়
গাদাগাদা পেইন কিলার বা ব্যথানিবারণকারী ট্যাবলেট খেলে উপকারের চেয়ে ক্ষতি বেশি হয়। স্টেরয়েডযুক্ত ব্যথানিবারণকারী ঔষধ খেলে অল্প সময়ে ব্যথা দূর হলেও, স্টেরয়েডের প্রভাব কিন্তু শরীরে থেকেই যায়। স্টেরয়েড হলো কিডনির জন্য ক্ষতিকর।
তাই ব্যথা শুরু হলেই ঔষধের কাছে না গিয়ে ঘরোয়া কিছু পদ্ধতি প্রয়োগ করে নিজেই ব্যথা কমানোর পদক্ষেপ নিন। এটাই বেশি নিরাপদ।