মানসিক চাপ থেকে মুক্তি মিলবে কী করে?
আগেরকার দিনের তুলনায় বর্তমানে মানুষের মাঝে মানসিক চাপ বা স্ট্রেস এর মাত্রা বেড়েছে। এর পেছনে দায়ী মানুষ নিজেরাই। নিজেদের সৃষ্টি করা এই আগুনে নিজেরাই পুড়ে। পোড়া সহ্য করতে না পেরে কেউ কেউ বেছে নেয় আত্মহননের পথ। কেন এত মানসিক চাপ? মানসিক চাপ থেকে মুক্তি মিলবে কী করে? মনকে শীতল রাখা কি সহজ হবে না?
অবশ্যই মন শীতল রাখা যাবে, সহজেই স্ট্রেস কমানো যাবে। কী করে এ থেকে মুক্তি পাবেন তা জানুন।
পড়ুন- মানসিকভাবে ভালো থাকার উপায়
মানসিক চাপ কেন হয়?
মানসিক এই যন্ত্রণা হওয়ার পেছনে বেশিরভাগ দায়ী নিজেরাই। তারপর আসে আশেপাশের মানুষ আর পরিবেশ। আসলে নিজের কারণেই আশেপাশের মানুষেরা সুযোগ পেয়ে যায়।
স্ট্রেসের শিকার হওয়ার কিছু কারণ হলো - পর্যাপ্ত শারীরিক পরিশ্রমের ঘাটতি, শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ নড়াচড়া না হওয়া, ক্লান্তি, সঠিক খাদ্যাভ্যাস মেনে না চলা, নিজের সাধ্যের বাইরে কাজ করতে যাওয়া, কাজ করার সঠিক রুটিন না থাকা, "না" বলতে না পারা, আবেগ প্রকাশ করতে না পারা, বিশ্বস্ত মানুষের অভাব।
মানসিক চাপ থেকে মুক্তি মিলবে যে উপায়ে
পরিবার
পরিবারের চেয়ে আপন কেউ হয় না। সবসময় একা না থেকে পরিবারের সদস্যদের সাথে সময় কাটান। মন খুলে কথা বলুন। সুখ কিংবা দুঃখ যা-ই ঘটুক জীবনে, পরিবারের সাথে তা বলুন। দেখবেন কোনো না কোনো উপায় ঠিকই পেয়ে যাবেন পরিবার থেকে।
প্রকৃতি
কথায় আছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মন ভালো করার মহা ঔষধ। প্রকৃতির মাঝে নিজেকে বিলিয়ে দিন। ঘুরতে যান। অথবা বাড়ির পাশের কোনো সবুজ শ্যামল পরিবেশে বসে থাকুন। দূরের সবুজ গাছপালা দেখুন। গবেষণা বলেছে প্রকৃতির সাথে ১০ মিনিট থাকলেই মন ভালো হয়ে যেতে পারে যে কারও।
সঠিক খাবার
খাবার শুধু শারীরিক স্বাস্থ্যের জন্যই নয়, মানসিক স্বাস্থ্যেও প্রভাব ফেলে। অতিরিক্ত ভাজাপোড়া, চিনিযুক্ত খাবার খেলে মানসিক চাপের পরিমাণ আরও বেড়ে যায় বলে গবেষণায় উঠে এসেছে। আবার অতিরিক্ত খাবার গ্রহণ করলেও মনে একধরণের চাপ পড়ে। নিয়মিত খাবার না খাওয়াও মনের জোরকে কমিয়ে দিয়ে স্ট্রেসের সৃষ্টি করে থাকে। তাই নিয়মিত ২-৪ বার বার স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে। মুড ভালো করার জন্য ভিটামিন-বি ও ম্যাগনেশিয়াম খুবই কার্যকর।
নিজেকে সময় দিন
নিজে কী করতে ভালোবাসেন সেটা করুন। ব্যস্ততার মাঝে একটু সময় বের করুন নিজের পছন্দের কাজ করার জন্য। সেটা হতে পারে মুভি দেখা, গান শোনা, নাটক দেখা, নাচ করা, খেলাধুলা করা, বাগান করা, বই পড়া, পরিবারের সাথে সময় কাটানো ইত্যাদি।
নিজের জন্য সীমানা নির্ধারণ
আপনার সাধ্যের ও সময়ের বাইরে কোনো কাজ করতে যাবেন না। বাড়তি কাজ করতে গেলে তা আপনার মনের উপর বোঝা চেপে বসবে। আগের কাজগুলো আগে শেষ করুন। তারপর অন্য কাজে হাত দিন। অন্য কেউ তার কাজ করে দিতে বললে সৌজন্যতা বা ভদ্রতার জন্য চাপ নিতে যাবেন না। আগে নিজের কাজ শেষ করুন, তারপর আরেকজনের কাজ করার সময় থাকলে করে দিন।
"না" বলতে শিখুন
বেশিরভাগ মানুষই সরাসরি "না" বলার সাহস রাখে না। কে কী মনে করবে তা ভেবে সৌজন্যতা দেখিয়ে আরেকজনের কথায় রাজি হয়ে যায়। ফলে এতে অন্যরা আপনাকে আরও সস্তা পেয়ে যায়। এবং আপনার উপর নিজেদের কাজও চাপিয়ে দিতে আসে। ফলস্বরূপ হয় আপনার মানসিক অশান্তি। তাই সরাসরি "না" বলার সাহস রাখুন। আপনার কী মতামত তা স্পষ্টভাবে বলে দিন।
গভীর শ্বাস নিন
কাজের ফাঁকে অথবা কাজের শেষে লম্বা একটা শ্বাস ছাড়ুন। এতে ক্লান্তিও বের হয়ে আসবে। সাথে স্ট্রেস হরমোনও কমতে থাকবে। মেডিটেশনও করতে পারেন।
এই টপিকের বিস্তারিত লেখা আছে পুরনো এক আর্টিকেলে। লিংক উপরে দেওয়া আছে।